সইফ-কাণ্ডে চুরির ঘটনা সব সাজানো?নেপথ্যে রয়েছেন স্ত্রী কারিনা কাপুরই
বুধবার রাতে নিজ বাড়িতে হামলার শিকার হওয়ার পর টানা ৫ দিন হাসপাতালে ছিলেন বলিউড অভিনেতা সাইফ আলি খান।
মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে খুঁড়িয়ে, খুঁড়িয়ে হাঁটা নয়, রীতিমতো হেঁটে হাসপাতাল থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। আবার এই হামলাকে কেন্দ্র করে আসছে নিত্য নতুন তথ্যও।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসপাতাল থেকে বের হয়েই রীতিমতো হেঁটে হাসপাতাল থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি এবং পাপারাজ্জিদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে করজোড়ে অভিবাদন জানাতেও দেখা যায় বলিউড তারকা সাইফ আলী খান কে। হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার সময় সাইফের পরনে ছিল সাদা শার্ট, জিন্স, বাঁ হাতের কব্জিতে বাধা ব্যান্ডেজ, ছোট করে ছাঁটা চুল, পরিষ্কার কামানো দাড়ি।
বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খানের ওপর হামলায় দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতার, নানান ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ, এবং সেই সিএনজি চালক ভজন সিং কে পুরস্কার দেওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। আবার এরই মধ্যে সাইফ-কারিনার সম্পর্কের সাথে হামলার যোগ সূত্র থাকার নতুন তথ্যও প্রকাশ পাচ্ছে.
সাইফ আলী খান হামলার রাতে দ্রুত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন, সিএনজি চালক ভাজন সিং এর সহযোগিতায় দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে দেন সাইফ আলী খানকে. ভাজন সিং এর মত মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর.
কিন্তু সব তো ঠিকঠাক ছিল, ঘটনাটি সন্দেহের বহিঃপ্রকাশ ঘটে পাঁচ দিনের মাথায় হাসপাতাল থেকে যখন সাইফকে ছেড়ে দেওয়া হয়, তখন সকলে তার চেহারা দেখে চমকে ওঠেন । হাতের কব্জি ও ঘাড়ের কাছে ব্যান্ডেজ ছাড়া ক্ষতের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি সাইফের শরীরে। চোখে-মুখে উজ্জ্বলতা দেখে সন্দেহের দানা বাঁধে অনেকের মনে। অনেকেই এই ঘটনাকে সাজানো বলেও অভিহিত করেন!
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে অভিনেতাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান স্ত্রী কারিনা কাপুর, পরিবারের সদস্যেরা ও পুলিশ। তবে সাইফ এত বড় অস্ত্রপাচারের পর এত দ্রুত বাড়ি ফিরতেই, সামাজিক যোগাযোমাধ্যমে বিভিন্ন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে .
আদৌ কি কিছু হয়েছিল সাইফ আলি খানের?
নাকি পুরো ব্যাপারটাই সাজানো?
কেন এ ধরনের প্রশ্ন ওঠাচ্ছেন ভারতীয়রা, সেসব প্রশ্নেরও যৌক্তিকতা কারণ জানিয়েছেন সামাজিক মাধ্যম. তাদের প্রশ্ন- ‘যে ব্যক্তির এত বড় অস্ত্রোপচার হয়েছে সেটাও আবার মেরুদণ্ডে, সে কী করে এত তাড়াতাড়ি দৃপ্ত ভঙ্গিতে হাঁটাচলা করতে পারে? এরকম গুরুতর আঘাত, বড় একটি অস্ত্রোপচারের পর কি এত তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠা যায়?’ কেউ আবার লিখছেন- ‘যা হয়েছে, তার থেকে বেশি পল্লবিত হয়েছে গোটা ঘটনা।’
এবার এক অভিনেতা সইফ-কাণ্ডে চুরির ঘটনা সব সাজানো বলে দাবি করেছেন । সেই অভিনেতা জানেন নেপথ্যে রয়েছেন স্ত্রী কারিনা কাপুরই!
এবার সাইফকে মাত্র পাঁচ দিনে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে দেখে সন্দেহ প্রকাশ করেন চিত্র সমালোচক কমল আর খান। নিজের এই কথার জন্য একাধিকবার আইনি বিড়ম্বনায়ও পড়তে হয়েছে কমল আর খানকে।
কমলের কথায়, ‘সাইফকে ছয় বার ছুরি দিয়ে কোপানো হলো আর হামলাকারীকে একটা আঁচড় পর্যন্ত দেননি সাইফ! যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার সঙ্গে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া ব্যক্তি মুখেরও কোনো মিল নেই। তাই আমার মনে হয় সে রাতে ওদের বাড়িতে কেউ আসেনি, আর এটা সাইফ-কারিনার ঝগড়ার পরিণতি।’
যদিও কমলের এই দাবি কেউ বিশেষ পাত্তা দিতে নারাজ।
সাইফের ঘটনা নিয়ে শিবসেনার প্রাক্তন সাংসদ সঞ্জয় নিরুপম প্রশ্ন তুলেছেন । তিনি বলেন, ‘যার এমন একটা অস্ত্রোপচার হয়েছে, তিনি কীভাবে এমন নাচতে নাচতে বাড়ি ঢুকলেন?’আমার মনে হয়, পরিবারের তরফ থেকে জানানো উচিত, ঠিক কতটা আহত হয়েছিলেন তিনি। সাইফ এমনভাবে হাসপাতাল থেকে বেরোলেন, যেন কিছুই হয়নি!’
চিকিৎসকদের কাছেও আরো প্রশ্ন করেছেন সঞ্জয় নিরুপম। তার কথায়, ‘যার ৬ ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার হয়েছে, তিনি চার দিনে চাঙ্গা হয়ে গেলেন কীভাবে?’
লীলাবতী হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, সাইফের শরীরে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় পড়েছে এলোপাথাড়ি ছুরির কোপ। শরীরে ছিল ৬টি ক্ষত, তার মধ্যে দুটি বেশ গভীর। পিঠে গেঁথে ছিল আড়াই ইঞ্চি ছুরি। ঘাড়েও গভীর ক্ষতচিহ্ন ছিল।
চিকিৎসকরা প্রথম দিনেই জানিয়েছিলেন, অল্পের জন্য বড় বিপদ থেকে বেঁচে গেছেন বলি-তারকা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়েও শরীরে গেঁথে ছিল ছুরির অংশ, চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করে তা বের করেন। শিরদাঁড়ায় ২.৫ ইঞ্চির ছুরি গেঁথে ছিল, আর সে কারণে সেরিব্রোস্পাইনাল তরল নির্গত হয়েছিল বলেও জানা যায়।
আহত হওয়ার মাত্র ৫ দিনের মাথায় সাইফকে ফিট বা স্বাভাবিক অবস্থায় দেখা যাওয়ায় নেটিজেনদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি হয়েছে। কিছু মানুষ মনে করছেন, ঘটনাটি অতিরঞ্জিত বা রটনা বেশি হয়েছে, বাস্তবে হয়তো ততটা গুরুতর কিছু ঘটেনি