গাজায় গড়ে প্রতিদিন ৪২ জন শিশুকে হত্যা

গাজায় গড়ে প্রতিদিন ৪২ জন শিশুকে হত্যা 


গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি সামরিক আগ্রাসনের  ৪১০তম দিন পার হয়েছে। এই সময়ে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ১৭,০০০ ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে। গড়ে প্রতিদিন ৪২ জন শিশুকে হত্যা করা হয়েছে, যা চরম মানবিক বিপর্যয়ের দৃষ্টান্ত।  


ফিলিস্তিনের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এই হত্যাকাণ্ড একটি সুস্পষ্ট গণহত্যা। তারা ইসরাইলি বাহিনীর এই তৎপরতার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানির রাজনৈতিক ও সামরিক সহায়তাকে দায়ী করেছে।  


গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজায় এ পর্যন্ত মোট ৪৩,৯৮৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১,০৪,০৯২ জন।  


মানবাধিকার কর্মীরা গাজার এই পরিস্থিতিকে “অসহনীয়” এবং “মানবিকতার ওপর চরম আঘাত” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তারা বিশ্ব সম্প্রদায়কে এই গণহত্যা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।  


গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রভাবে মানবিক সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ধারাবাহিক বিমান হামলা এবং গোলাবর্ষণে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ পর্যন্ত নিহত ১৭,০০০ শিশুর করুণ পরিসংখ্যান ইঙ্গিত দেয় এক চরম মানবিক বিপর্যয়ের।  


অধিকার সংস্থাগুলোর মতে, বেসামরিক জনগণই ইসরাইলি হামলার প্রধান লক্ষ্য। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বারবার যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তার আহ্বান জানালেও পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।  



বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই হামলার ধারা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধের শামিল। খাদ্য, পানি, বিদ্যুৎ ও ওষুধের অভাব গাজায় মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ করে তুলছে। বিশেষ করে বেঁচে থাকা শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাব অত্যন্ত ভয়াবহ।  


ফিলিস্তিনের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে। তাদের মতে, “এই নৃশংসতা বন্ধ করা এবং শিশুদের রক্ষা করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নৈতিক দায়িত্ব।”  


বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর নীরবতা এবং ইসরাইলকে প্রদত্ত রাজনৈতিক সমর্থন হামলাকারী বাহিনীকে আরও আগ্রাসী করে তুলেছে বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ।  


গাজার মানবিক সংকট কেবল ফিলিস্তিনের নয়, বরং এটি গোটা বিশ্বের জন্য মানবতার চরম ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। 


Post a Comment

Previous Post Next Post